Friday, August 31, 2018

মানসিক শক্তি

হয়তবা তখন উন্মুক্ত চিন্তা ঝাঁপিয়ে বেড়াতো। মুক্ত একটা আকাশে নিজের ইচ্ছেগুলো ছড়িয়ে দিবো, ক্যানভাস বানাবো সেই আকাশটাকে। বড় বড় চুল, সাথে গিটারের মূর্ছনায় গলা ছেড়ে একটার পর একটা গান হবে। যেখানে নতুন প্রেমের উচ্ছ্বাসে ঘুম হবে না। পাশেই বন্ধুদের তাশ খেলা চলবে। গিটার রেখে চাদর মুড়ি দিয়ে শীতের রাতে আবাসিক হল থেকে বের হয়ে এলাকার পুরোনো চায়ের দোকানে গরুর সরের চা খাব। হলে ফিরে ২-৩ ঘন্টার মরা ঘুম আর তারপর তড়িঘড়ি করে ক্লাসে গিয়ে স্যারের বকুনি শুনে ক্লাসের বাইরে পায়েচারী। ক্লাস শেষে বন্ধুদের নিয়ে নোটগুলো রেডি করা আর দুপুরে ২০ টাকায় নিজের উদরপুর্তি। খাওয়া শেষে ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় গাছটার নিচে বিশ্রাম নেয়া আর পোড়া মনে একটা গানের সুর তোলা। শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখা আর তাঁকে অনুভব করা। নিজের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটিকে ভালো লাগা কিন্তু কখনই তাকে না বলা। রাত ৩টায় বন্ধুর অসুস্থ হয়ে যাওয়া আর বাকী রাতটা হাসপাতালের চেয়ারেই তার জ্ঞান ফেরার অপেক্ষা। চোখ খোলার পরই ঠাস ঠুস দুটো চড় দেয়া ; কান্নাভেজা কন্ঠে তাকে ঘুমের ওষুধ না খাওয়ার প্রতিজ্ঞা করানো......
_________________________________

একাডেমীক দূর্বলতায় হয়ত স্বপ্নগুলো বাস্তব হয়নি। অধরা সপ্নের মাশুল গুনতে হয় আর সেটাকে চেপে দেয়া যায় না। নিজের মানসিকতাকে বিস্তর পর্যায়ে রাখতে বিশালতা দরকার। বিশাল আকাশ যে দেখেনি সে কখনই এর মর্ম বুঝবে না। "সবাই আমার কাছে সমান" এই কথাটুকু খুব কমই শোনা যায়। আর ২ থেকে ৩ জনের মুখে এই কথা শুনেছি। সবাই বলতে পারে না এই বড় কথাটা। বললেও সেটাকে ঠিক রাখতে পারে না। মনুষ্য চিন্তনে শুধু ঠেলে পিছে পাঠানোর প্রতিযোগিতা চলে। দৌড়াতে গিয়ে ল্যাং মারা বা হাডুডু খেলায় পারদর্শিতা এখানের যথেষ্ট উদাহরণ। নিজে নিজে এক প্রকার "দম্ভ খেলা"র উত্থান করা আর বসে বসে সেটাকে উপভোগ করাটা; হীনমন্যতার আরেকটা বৈশিষ্ট্য। নিজের আখের ঠিক রেখে বাকী দুনিয়ার অশান্তি শান্তিতে অনুভব করার নগ্ন চরিত্র রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। আমাদের চিন্তার অপরিপক্কতা আর অসষম জীবনাচরণ থেকে পরের প্রজন্ম সেই দুশ্চরিত্র মনোভাব অর্জন করবে। জাতিগত ভাবে হয়ত এইকারণেই আমরা পশ্চাদপদতায় ভুগছি। যখন একটা প্লাটফরমেই আমাদের অসষম আর হীন প্রতিযোগিতা, জোটবদ্ধ হয়ে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া হয় সেখানে আর যাই হোক জাতির অগ্রদূত তৈরি হয় না। হাস্যোজ্জ্বল আর প্রাণোচ্ছল একটা গণ্ডি হারিয়ে যেতে বসে। স্বভাবতই সেখানে কিন্টারগার্ডেনের মত ভালো ফলাফল নিয়ে কাড়াকাড়ি লাগে কিংবা পুরাতনদের বিদায়ে নতুন চাটুকারদের উপস্থিতি তৈরি হয়। ঠিক যেন দেশীয় রাজনীতির প্রভাব; সবখানেই চর্চা চলে।
আশংকার জাল মনে দানা বেঁধেছিলো আজ থেকে আরো কয়েক বছর আগে। সেটাই সত্যি হতে চলেছে। তবে কিছু কাঙ্ক্ষিত বা অনাঙ্ক্ষিত মায়াজাল আমাদের বেঁধে রাখে। আর তাদের জন্যই হয়ত "সাহস" হারিয়ে যায় না। উপরন্তু, প্রতিরোধের শক্তি হিসেবে কাজ করে এবং আরো শক্ত করে তোলে।

No comments:

Post a Comment

নতুনে ভুলি নাই

তুমি ফুরায়ে গিয়েছো কবে আমিতো চলে যাব; বলে, থেকে রয়েছি এতক্ষণ হারিয়ে যাবার গল্পে কে আগে? কে পরে? শুন্য আকাশ তলে আমি একজন, একা। তোমারি আশাতে ছ...